নিরাপদ ইন্টারনেট




বিশ্বে বর্তমানে ইন্টারনেট প্রযুক্তির জয়জয়কার অবস্থা। ইন্টারনেটে প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা এবং এর বহুমুখী ব্যবহারের ফলে প্রতিনিয়তই বাড়ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ যেখানে তথ্যপ্রযুক্তিকে দিনবদলের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করছেন সেখানেও ইন্টারনেটের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তিকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী আলোচিত একটি ইস্যু হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নিরাপত্তা। বিশ্বব্যাপী সাইবার অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা আইটি ভিত্তিক নিরাপত্তা জোরদার করতে নানারকম উদ্যোগ ও আপনার তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর জীবনকে নিরাপদ করতে বিভিন্ন টিপস্‌ প্রদান করছেন। ইন্টারনেট নিরাপত্তা বিষয়ে কিছু সাধারণ টিপস্‌ নিয়ে এবারের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন-

তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বায়নের যুগে প্রযুক্তির সেবা মানুষের দ্বারগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রধানতম একটি মাধ্যম হচ্ছে ইন্টারনেট। বর্তমানে শিক্ষা, গবেষণা, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনোদন, যোগাযোগ, গণমাধ্যম, ব্যক্তিগত যোগাযোগ, চিকিৎসাসহ আমাদের সমাজ জীবনের এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে ইন্টারনেটের ব্যবহার অনুপস্থিত। ইন্টারনেট ব্যবস্থার ফলে গোটা বিশ্ব এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ খ্যাত যে ধারণা আমরা পোষণ করে থাকি তা সম্ভব হয়েছে ইন্টারনেট সুবিধার ফলে। বিশ্বে বর্তমানে ইন্টারনেট প্রযুক্তির জয়জয়কার অবস্থা। ইন্টারনেটে প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা এবং এর বহুমুখী ব্যবহারের ফলে প্রতিনিয়তই বাড়ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ যেখানে তথ্যপ্রযুক্তিকে দিনবদলের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করছেন সেখানেও ইন্টারনেটের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। যেকোন প্রযুক্তির ব্যবহার উপযোগীতাই তার চাহিদা তৈরি করে। এক্ষেত্রে ইন্টারনেটের নানারকম ব্যবহারিক সুবিধার ফলে সর্বত্রই এর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দৈনন্দিন জীবনে তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেট নির্ভরশীলতা বাড়ার সাথে সাথে ইন্টারনেট ব্যবহারের ভাল ও মন্দ দুটো দিকই সমাজে লক্ষ্যনীয়। বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তিকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী আলোচিত একটি ইস্যু হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নিরাপত্তা। বিশ্বব্যাপী সাইবার অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা আইটি ভিত্তিক নিরাপত্তা জোরদার করতে নানারকম উদ্যোগ ও আপনার তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর জীবনকে নিরাপদ করতে বিভিন্ন টিপস্‌ প্রদান করছেন। ইন্টারনেটের কোটি কোটি ব্যবহারকারীর মধ্যে চ্যাট, গেম, মিউজিক ডাউনলোড, গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্যের সমাবেশ, ব্যক্তিগত যোগাযোগ, শিক্ষা-গবেষণা, বাণিজ্যসহ নানা কার্যক্রমের সমন্বয়ে বর্তমানে ইন্টারনেট শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে বিশ্ব স্বীকৃত। সবদিক বিবেচনায় ইন্টারনেট বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। যদিও ইন্টারনেট খুবই উপকারী একটি মাধ্যম হিসেবে সর্বজনবিদিত পাশাপাশি কম্পিউটার ও ইন্টারনেটে রক্ষিত ব্যক্তিগত ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহও রয়েছে সর্বদা হুমকির মুখে। তাই কম্পিউটার-ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করে সাইবার নিরপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হচ্ছে। ইন্টারনেট সংযুক্ত কম্পিউটারে ঝুঁকির মাত্রা রয়েছে অধিক। তবে ঝুঁকির মাত্রা সাধারণত সুরক্ষিত ইন্টারনেট ব্যবস্থা ও নিরাপদ ইন্টারনেট ব্রাউজিং-এর উপর অনেকটাই নির্ভর করে থাকে। ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর কিছু কলাকৌশল জানলে আপনি যেমন সাইবার ঝুঁকি থেকে অনেক বেশি নিরাপদ থাকবেন তেমনি ব্রাউজিং এর খুঁটিনাটি বিষয়গুলো সম্পর্কে অজ্ঞতার ফলে আপনি প্রতিনিয়তই ঝুঁকির মধ্যে সামিল হবেন। আপনি মানে আপনার কম্পিউটার, কম্পিউটারে রক্ষিত বিভিন্ন তথ্য সর্বোপরি আপনার অনলাইন নিরাপত্তা। নিরাপদ ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর কলাকৌশল না জেনে অজ্ঞতা নিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করলে ম্যালওয়ার আক্রমণে আপনার সিস্টেম ঝুঁকির মধ্যে পড়বে এবং খুব সহজেই তা হ্যাকারের টার্গেটে পরিণত হতে পারে। ইন্টারনেট নিরাপত্তা বিষয়ে কিছু সাধারণ টিপস্‌ এই প্রতিবেদনে উপস্থাপন করা হলো যা ব্যবহারে ইন্টারনেট নিরাপত্তা হুমকি থেকে আপনার কম্পিউটার অধিকতর নিরাপদ থাকবে। টিপস্‌সমূহ হচ্ছে-

অবাঞ্চিত ইমেইল থেকে কোন অ্যাটাচমেন্ট খুলবেন না
অনেক সময় অবাঞ্চিত ইমেইল থেকে কিছু মেইল আপনার ইমেইলে আসে যা ক্ষতিকর প্রোগ্রাম ধারণ করতে পারে। যেমন- ভাইরাস, ম্যালওয়ার এবং ওর্মস। এই ক্ষতিকর প্রোগামগুলো প্রায়ই আপনার সিস্টেমের সার্ভার ধংসের অন্যতম কারণ হতে পারে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে উত্তম পন্থা হচ্ছে অবাঞ্চিত ইমেইল রিসিভ করা মাত্রই তাৎক্ষণিকভাবে তা ডিলিট করা। তবে এক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যে, আপনি আপনার কম্পিউটারে একটি এন্টিস্প্যাম সফটওয়্যার ইন্সটল করতে পারেন, যা আপনার ইমেইল প্রোগ্রামের ইনবক্স থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ক্যান করবে এবং আক্রমণকারী ইমেইল প্রতিরোধ করবে। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে বর্তমানে ইন্টারনেটের দৈনন্দিন ব্যবহারিক দিকের বিবেচনায় ইমেইল দ্রুত যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। তাই নিরাপদ ইমেইল ব্যবহার আপনার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। উপরোক্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনি উল্লেখিত সমস্যা থেকে মুক্ত হয়ে ইমেইল আদান-প্রদান করতে পারেন।

পেয়ার-টু-পেয়ার নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করা
আপনার সুরক্ষিত ও নিরাপদ নেটওয়ার্ক এর জন্য পেয়ার-টু-পেয়ার নেটওয়ার্ক ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভাল, কারণ তারা ম্যালওয়ার এবং ভাইরাস আক্রমণের সাধারণ বাহন হিসেবে কাজ করে। সাধারণত যখন আপনি পিটুপি সফটওয়্যার ব্যবহার করবেন তখন আপনার কম্পিউটারের ফাইলে প্রবেশ করতে আপনি অন্যান্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অনুমতি প্রদান করবেন। এমনকি তা হ্যাকারও হতে পারে।

প্রসিদ্ধ ওয়েবসাইট থেকে ফ্রি সফটওয়্যার ডাউনলোড করা
দৈনন্দিন প্রয়োজন ও নানান ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য আমরা প্রতিনিয়তই ইন্টারনেট থেকে হরেকরকম ফ্রি সফটওয়্যার ডাউনলোড করে থাকি। না বুঝে শুনে অনেক সময় আমরা খেয়াল খুশি মত যেনতেন ওয়েব সাইট থেকে ফ্রি সফটওয়্যার ডাউনলোড করে থাকি। ফলশ্রুতিতে আমাদের কম্পিউটারে নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি হয়। এজন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রের জন্য ফ্রি সফটওয়্যার ডাউনলোড করতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করে প্রসিদ্ধ ওয়েবসাইটসমূহ থেকে সফটওয়্যার ডাউনলোড করা উত্তম। ইন্টারনেটে ফ্রি সফটওয়্যারের সহজলভ্যতার কারণে যখন আপনি ডাউনলোড করবেন তখন অবশ্যই আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে।
ফ্রিওয়্যার অনেক সময়ই ক্ষতিকর প্রোগ্রামের মাধ্যমে লেইস্‌ করতে পারে। একবার আপনার কম্পিউটারে প্রবেশ করলে এটি আপনার কম্পিউটারের সার্ভার ধ্বংস এবং আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যেমন- ইউজার নেম, পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ড নম্বার চুরির অন্যতম কারণ হতে পারে। উক্ত সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে ফ্রিওয়্যার ডাউনলোড করতে হলে তা প্রসিদ্ধ কোন ওয়েব সাইট থেকে করতে হবে, যা আপনার জন্য ভাইরাস এবং ম্যালওয়ার মুক্ত সফটওয়্যার নিশ্চিত করবে।

অপারেটিং সিস্টেম, সফটওয়্যার এবং ড্রাইভারগুলো আপডেট রাখতে হবে
তথ্যপ্রযুক্তি দিন দিন সমৃদ্ধ থেকে সমৃদ্ধতর হওয়ার পিছনে লক্ষ্যণীয় একটি বিষয় হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তনশীলতা। এই দ্রুত পরিবর্তনশীল তথ্যপ্রযুক্তির জগতে পূর্ণাঙ্গরূপে মানিয়ে নিতে প্রয়োজন প্রযুক্তির বিষয়গুলো সর্বদায় হালনাগাদ রাখা। আপনার দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত কম্পিউটারসহ সহায়ক বিষয়গুলো হালনাগাদ না রাখা মানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দুনিয়া থেকে প্রতিনিয়ত পিছিয়ে পড়া। কম্পিউটার হালনাগাদ না করার ফলে একদিকে আপনার ব্যবহারিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ কম্পিউটার যেমন সাইবার আক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে থাকে তেমনি অন্যদিকে প্রযুক্তির অনেক সুবিধা নিতে ব্যর্থ হতে হয়। সর্বোপরি আপনার কম্পিউটারকে নিরাপদ রাখতে প্রয়োজন কম্পিউটারের বেশ কিছু জিনিস হালনাগাদের বিষয়ে সচেতনতা। যা আপনার কাজে স্বাচ্ছন্দ্য ও গতি বৃদ্ধি করবে। নিয়মিতভাবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে সর্বশেষ হটফিক্সেস প্যাচ সহকারে আপনার অপারেটিং সিস্টেম, সফটওয়্যার এবং ড্রাইভারগুলো আপডেট রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কম্পিউটারে ব্যবহৃত প্রোগ্রামগুলোর সর্বাধুনিক ও সর্বশেষ ভার্সন ব্যবহারে পূর্বের ভার্সনগুলোর চাইতে কম্পিউটারের নিরাপত্তা ঝুঁকি অনেক হ্রাস করবে। সর্বশেষ ভার্সন ব্যবহারের ফলশ্রুতিতে আপনার কম্পিউটারে ভাইরাস এবং স্পাইওয়্যার আক্রমণজনিত ঝুঁকি অনেক কমবে, সুরক্ষিত থাকবে আপনার কম্পিউটার।

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার
তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর কম্পিউটার-ইন্টারনেটের যুগে আমরা কমবেশি সবাই পাসওয়ার্ড নামক শব্দটির সাথে ব্যাপকভাবে পরিচিত। পাসওয়ার্ড শব্দটির সাথে কম্পিউটার ও অনলাইন নিরাপত্তার বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে সামনে চলে আসে। যেহেতু অনলাইন নিরাপত্তা অনেকখানি আপনার পাসওয়ার্ডের উপর নির্ভর করে তাই পাসওয়ার্ড সুরক্ষার বিষয়ে আপনাকে অধিক মনোযোগী হতে হবে। আপনার অনলাইন অ্যাকাউন্ট এবং সিস্টেম ফাইলের জন্য শক্তিশালী পাসওয়ার্ডের ব্যবহার আপনার তথ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। পাসওয়ার্ড হিসেবে আপনি নিজের নাম কিংবা জন্মতারিখ ব্যবহার করবেন না। কারণ তা খুব সহজেই ক্রাক হতে পারে। এক্ষেত্রে নিরাপদ পাসওয়ার্ড ব্যবহারের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো আপনার জানা থাকা আবশ্যক। আপনি এমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন যা হবে আলফানিউমেরিক ক্যারেকটার সমৃদ্ধ এবং এটা নূন্যতম আাট ক্যারেক্টার বিশিষ্ট হতে পারে। অনেকে নিজের সিস্টেমের মধ্যে পাসওয়ার্ড স্টোর করে রাখে। যা নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে সাহায্য করে। তাই আপনার সিস্টেমের মধ্যে কখনো পাসওয়ার্ড স্টোর করবেন না। আপনাকে সবসময় জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহারের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। আপনার পাসওয়ার্ড অর্গানাইজ এবং ম্যানেজ করতে পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করতে পারেন। একটি ভাল পাসওয়ার্ড ম্যানেজার প্রোগ্রাম আপনার সকল পাসওয়ার্ডগুলোকে এ্যানক্রেপট করবে। কেউ কেউ নিজের পাসওয়ার্ড অন্যের সাথে শেয়ার করে থাকেন। যা অনেক সময় আপনার অনলাইন নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিতে পারে। এই দিকটি বিবেচনা করে আপনার পাসওয়ার্ড অন্য কারো সঙ্গে কখনোই শেয়ার করবেন না।

ফায়ারওয়াল ইন্সটল এবং ব্যবহার
কম্পিউটার থেকে তথ্যের আদান-প্রদানজনিত কারণে কিছু সতর্কতার অভাবে আপনার কম্পিউটার নিরাপত্তা ঝুঁকির কবলে পড়তে পারে। এক্ষেত্রে কিছুটা বাড়তি সতকর্তা পূর্ণাঙ্গরূপে আপনার কম্পিউটারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। আপনার সিস্টেমে তথ্যের আদান-প্রদান নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে একটি ফায়ালওয়াল ব্যবহার করতে পারেন। আপনার সিস্টেমের অথোরাইজড অ্যাকসেস হিসেবে ফায়ারওয়াল প্রতিরোধ করতে সক্ষম। ফায়ারওয়াল আপনার ইনকামিং এবং আউটগোয়িং তথ্যের কার্যকরী সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।

এন্টি-ভাইরাস এবং এন্টি-স্পাইওয়্যার টুল ইন্সটল করুন
কম্পিউটার ব্যবহারকারী হিসেবে ভাইরাসের সাথে আমরা যেমন সবাই পরিচিত। তেমনি ভাইরাস প্রতিরোধে এন্টি-ভাইরাসের সাথেও আমরা পরিচিত। বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য অনেক কম্পিউটার ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকায় ভাইরাস, স্পাইওয়্যারজনিত আক্রমণে কম্পিউটার ব্যবহারে আমাদেরকে অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। বিভিন্ন ক্ষতিকারক কম্পিউটার প্রোগাম যেমন- ভাইরাস, ওয়ার্ম, অ্যাডওয়্যার এবং স্পাইওয়্যার থেকে আপনার সিস্টেমকে সুরক্ষিত রাখতে আপনি এন্টি-ভাইরাস এবং এন্টি-স্পাইওয়্যার টুল ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত আপনার কম্পিউটারের সম্পূর্ণ সিস্টেমের স্ক্যান সম্পাদন করতে এই টুলগুলো কনফিগার করতে পারেন। সর্বশেষ হুমকি থেকে আপনার সিস্টেমকে রক্ষা এবং বিভিন্ন রকম আক্রমণ সনাক্ত করতে এই টুলগুলো সক্ষম। এমনকি টুলগুলো সর্বশেষ ভাইরাসকে সংজ্ঞায়িত এবং নিরাপত্তা আপডেট করতেও সক্ষম। যদিও ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে আমাদের দৈনন্দিন জীবেনর নানা কার্যক্রম সহজ হয়েছে তবুও আপনার কম্পিউটারের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা গ্রহণ করতে সতকর্তা অবলম্বন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এন্টি-স্পাইওয়্যার টুলের ব্যবহার আপনার কম্পিউটারকে ভাইরাস এবং স্পাইওয়্যার মুক্ত রাখতে সাহায্য করবে। আপনার কম্পিউটারকে স্পাইওয়্যার, মালওয়্যার, অ্যাডওয়ার, ভাইরাস এবং অন্যান্য কম্পিউটার আক্রমণ থেকে নিরাপদ রাখতে ভাইরাস এন্টি-স্পাইওয়্যার প্রোগ্রাম কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। স্পাইওয়্যার প্রতিরোধ এবং রিমুভ করতে আপনি www.sywarefixpro.com এই ওয়েব সাইটটি থেকে বিস্তারিত তথ্য পেতে পারেন।

আপনার ওয়্যারলেস হোম নেটওয়ার্ক নিরাপদ রাখার টিপস
সাইবার আক্রমণ থেকে আপনার নেটওয়ার্ককে সুরক্ষিত রাখার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ওয়্যারলেস হোম নেটওয়ার্ক নিরাপদ রাখতে অবশ্যই কিছু কলাকৌশল প্রয়োগ করতে হবে এবং এ বিষয়ে ধারণা থাকাও আবশ্যক। কোন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ল্যাপটপ ব্যবহার করলে অনেক সময় আপনি মুক্ত অনিরাপদ ওয়্যারলেস অ্যাকসেস সনাক্ত করতে পারেন। ফ্রিলোডার, ক্ষতিকর কার্যক্রম যেমন এটা হতে পারে পাসওয়ার্ড স্নিফ করার জন্য খোলা অনিরাপদ ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কগুলো খুবই সংবেদনশীল। আচ্ছা ধরুন বাইরের কেউ একজন অবৈধভাবে কপিরাইট ম্যাটেরিয়াল ডাউনলোড করছিল এবং তদন্তে অবৈধ এই কার্যক্রমের সূত্র খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল এই অপরাধ আপনার রাউটার থেকে হয়েছে। ভেবেছেন এরকম কোনো ঘটনার সম্মুখীন হলে কি ধরনের বিপদের মুখে আপনি পড়তে পারেন? এজন্যই ওয়্যারলেস হোম নেটওয়ার্ক সর্বদাই নিরাপদ রাখা প্রয়োজন। সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে আপনার ওয়্যারলেস হোম নেটওয়ার্ককে রক্ষা করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। সৌভাগ্যবশত সম্প্রতি সহজলভ্য কনজ্যুমার গ্রেইড রাউটারগুলো এখন সর্বোচ্চ শক্তিশালী এবং সহজেই প্রদান করছে ওয়্যারলেস নিরাপত্তা সম্বলিত নানা ধরনের বৈশিষ্ট্য।
আপনার হোম ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক সুরক্ষিত রাখতে বেশকিছু টিপস্‌ অনুসরণ করতে পারেন যা আপনার নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। আপনার রাউটারের এসএসআইডি (সার্ভিস সেট আইডেন্টি ফায়ার) দুবৃত্তদের ল্যাপটপ অথবা ওয়্যারসে এনাবল ডিভাইসের সনাক্তকরণ সহজেই প্রতিরোধ করতে পারে। সাধারণভাবে একটি নন-ব্রডকাস্টিং ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করতে এই অপশনটি ওয়্যারলেস ডিভাইসের উপর চাপ প্রয়োগ করে থাকে। সম্পূর্ণভাবে এসএমআইডি সংযুক্ত করার নিয়ম-কানুন ওয়্যারলেস ডিভাইস ব্যবহারকারীদের জানা উচিত।
আপনার এসএসআইডি ব্রডকাস্ট করতে আপনি যদি অধিকর শ্রেয় মনে করেন তবে যেকোনোভাবে আপনি অস্পষ্ট নাম ব্যবহার করবেন যেন কেউ চিহ্নিত করতে না পারে যে আপনি কে।
ম্যাক আড্রেস ফিল্টারিং করতে সক্ষম। একটি ম্যাক অ্যাড্রেস হচ্ছে ইউনিক আইডেন্টিফায়ার বিভিন্ন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের দ্বারা নেটওয়ার্ক ডিভাইস সম্পাদন করে। একমাত্র অনুমোদিত ম্যাকঅ্যাড্রেস গ্রহণ করতে ওয়্যারলেস রাউটার কনফিগার করতে পারে। ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক কার্ডের ডিভাইস প্রোপাটিজ দেখার দ্বারা সহজেই কম্পিউটারের ম্যাক অ্যাড্রেস খুঁজে পাওয়া যেতে পারে।
ওয়াই-ফাই প্রোটেক্টড এ্যাকসেস (ডব্লিউপিএ) অথবা ডব্লিউপিএ২ (ভার্সন২) এর সাথে টেমপোরাল কী ইন্টিগ্রিটি প্রোটকল (টিকেআইপি) অথবা অ্যাডভান্সড এনক্রেপশন স্ট্যান্ডার্ড (এইএস) বাস্তবায়নের দ্বারা এনক্রেপশন করা সম্ভব। যদি আপনার ওয়্যারলেস ডিভাইস ইহা সাপোর্ট করে, তবে ডব্লিউপিএ২-এর সাথে এইএস হবে অধিকতর শ্রেয় এনক্রেপশন মেথড। আরেকটি অন্যতম সেরা বিকল্প হচ্ছে ডব্লিউপিএ যা টিকেআইপি’র সমন্বয়ে। যা বেশ পুরনো দিনের ওয়্যারলেস ডিভাইসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, যা ডব্লিউপিএ২ এইএস সাপোর্ট নাও করতে পারে। দীর্ঘদিন নির্ভরযোগ্যভাবে নিরাপদ বিবেচনা হিসেবে ডব্লিউইপি বর্জন করা ভাল। এনক্রেপশন মেথড এর উপর অবিচল থাকার পর পাশ ফ্রেইজ হচ্ছে সর্বশেষ পদক্ষেপ। শক্তিশালী পাশ ফ্রেইজের সাথে ছয় অথবা তার চেয়ে বেশি আপার এবং লোয়ারকেস লেটার এবং নম্বারের নূন্যতম ব্যবহার। যদিও দুর্বল প্রযুক্তিগত সমস্যার জন্য রাউটারের নিরপত্তা অপশনগুলো সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হতে পারে। বেশিরভাগ রাউটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যে কাউকে সহজেই সেটআপ, কনফিগার এবং ওয়্যারলেস অ্যাকসেসের নিরাপত্তা পরীক্ষা করতে সহজে সাহায্য করে থাকে বিস্ময়কর ক্ষমতাসম্পন্ন নিরাপত্তা প্রোসেস প্রদান করে। আপনার ওয়্যারলেস হোম নেটওয়ার্ককে রক্ষা করে নিরাপদ রাখার বিষয়টি গুরুত্বের বিবেচনায় উপেক্ষা না করে প্রোঅ্যাকটিভ হবেন।

আপনার পার্সোনাল আইডেনটিটি নিরাপদ রাখার টিপস
অনলাইনে নানারকম অপরাধ বৃদ্ধি পাবার ফলে আপনার পার্সোনাল আইডেনটিটি নিরাপদ রাখার কলাকৌশলগুলো আপনার নখদর্পনে থাকা উচিত। বিশ্বে প্রতিনিয়তই সাইবার অপরাধ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হচ্ছে। নিজের প্রয়োজনের তাগিদে অনলাইন নিরাপত্তা সম্পর্কে আপনাকে বেশ সচেতন হতে হবে। কারণ আপনার আইডেনটিটির সঙ্গে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িত। এ বিষয়ে অবহেলা করলে আপনাকে হয়ত বড় ধরনের মাশুল দিতে হতে পারে।
পার্সোনাল আইডেনটিটি চুরির ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। ২০০৩ সালে এ বিষয়ে দুটি অনুসন্ধান হয়েছিল। যার মধ্যে একটি গ্রাটনার রিসার্স এবং অন্যটি ছিল হাররিস ইন্টারঅ্যাকটিভ নামক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক। অনুসন্ধান থেকে জানা যায় যে ঐ সময় ১২ মাসে ৭-১০ মিলিয়ন লোক তাদের আইডেনটিটি চুরি হওয়া নিয়ে অভিযোগ করেছিল। তবে এ বিষয়ে একটা ব্যাপার সহজেই অনুমেয় যে আইডেনটিটি চুরির ঘটনা বেড়েই চলছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, নিজেকে রক্ষা করতে আপনি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন? এই ধরনের অপরাধীরা সাধারণত চুরি করা তথ্য দিয়ে নতুন ক্রেডিট কার্ড এ্যাকাউন্ট খুলে থাকে এবং তারা দ্রুত বড় ধরনের কেনাকাটা করে ফেলে তাদেরকে ধরার আগেই। প্রাথমিকভাবে তাদেরকে খুজে পাওয়া কষ্টকর হতে পারে অনেক আইডেনটিটির সাথে। আপনি এই ধরনের ভয়াবহ অপরাধ হ্রাস করতে বা আংশিক হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারেন। কিন্তু প্রশ্ন হতে পারে কিভাবে? উত্তরে হয়তো বলা যেতে পারে বায়োমেট্রিক ফ্ল্যাশ ড্রাইভের সাহায্যে। ফ্ল্যাশ ড্রাইভে আপনার পার্সোনাল ইনফরমেশন স্টোর করতে, এনক্রেপট ফাইল নিরাপদ রাখতে আপনার ফিংগার প্রিন্ট অ্যাকসেস প্রদান করবে। আপনার সকল পার্সোনাল ইনফরমেশন পাসওয়ার্ড, ইউজার নেম, অ্যাকাউন্ট ইনফরমেশন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য একটি নিরাপদ ফ্ল্যাশ ড্রাইভে রাখতে পারেন, পরবর্তীতে একমাত্র আপনি যখন চাইবেন তখন এতে প্রবেশ করবেন। এই তথ্যগুলো আপনি আপনার হার্ড ড্রাইভে ব্যাকআপ সিস্টেমে নিতে পারেন এবং এগুলো আপনার সাথে নিরাপদে রাখতে পারেন। যদি তথ্যগুলো কখনোও হারিয়ে যায় চুরি হয়ে যায় তখন আপনার ফিংগার প্রিন্ট ডাটাগুলোকে রক্ষা করবে।
বহুমুখী ব্যবহার হিসেবে কমার্শিয়াল সেটিং এ আপনি এই ফ্ল্যাশ ড্রাইভ ব্যবহার করতে পারেন। কারো নির্দিষ্ট কোন কোম্পানির ইনফরমেশন জানার প্রয়োজন নেই সেখানে কাজ করার জন্য। ফ্ল্যাশ ড্রাইভের সাহায্যে আপনি সর্বোচ্চ দশ জন ব্যবহারকারীকে প্রবেশের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, কোন ক্ষেত্রে তাদের প্রবেশ যদি প্রয়োজন হয়ে থাকে। নিরাপত্তার লেভেল পূর্বের মত একজন ব্যবসায়ী হিসেবে আপনাকে প্রদান করবে। আলাদা আলাদাভাবে একেকজন কোম্পানির তথ্য সম্পর্কে জানার অনুমতি পাবে এবং এক্ষেত্রে তারা নীতিগতভাবে দায়ী থাকবে।
তাদের ফিংগার প্রিন্ট প্রদান করবে তথ্যের নিরাপত্তা রক্ষা এমনকি যদি ইহা চুরিও হয়ে থাকে। অনেক কোম্পানিতে চুরির ঘটনায় ফিংগার প্রিন্ট টেকনোলজি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। যদি মাত্র পাঁচ জন চাকরিজীবি কোন প্রতিষ্ঠানের গোপন তথ্য সম্পর্কে সবকিছু জানে বা জানার অধিকার দেওয়া হয়। তবে তারাও তো তথ্য চুরির সুযোগ নিতে পারে। আপনার কোম্পানি তথ্যসমূহ ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ রাখা প্রয়োজন। বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে আপনার তথ্য কে বা কারা চুরি করেছে তা বের করা সম্ভব এবং কোথা থেকে কখন তা চুরি হয়েছে তাও বের করা সম্ভব।
ঘটনা ঘটার আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাসওয়ার্ড হ্যাকিং প্রতিরোধে পাসওয়ার্ড ম্যানেজার বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। আপনার পার্সোনাল ইনফরমেশন, ছবি, অন্যান্য সব তথ্য নিরাপদ রাখতে এটি বেশ কার্যকরী। সর্বোপরি বায়োমেট্রিক সিকিউরিটি, ফিংগার প্রিন্ট ফ্ল্যাশ ড্রাইভ ইত্যাদি প্রযুক্তি ব্যবহারে আপনি অধিকতর নিরাপদভাবে আপনার কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন।

ইন্টারনেট শপিং সিকিউরিটি
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে প্রযুক্তিনির্ভর নানারকম সেবা আমাদের দ্বারগোড়ায় খুব সহজেই পৌঁছে যাচ্ছে। এসব সেবা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নানা ক্ষেত্রে। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নানা প্রয়োজনে অনলাইন শপিং দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এক্ষেত্রে অনলাইন ভিত্তিক কেনাকাটা ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের প্রয়োজনীয়তা ও জনপ্রিয়তা যেমন বেড়ে চলছে তেমনি অন্যদিকে অনলাইন নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ছে। আপনার নানারকম অনলাইন কার্যক্রম যতটা সম্ভব নিরাপদে সম্পাদন করতে প্রয়োজন যথাযথ পদক্ষেপ ও সচেতনতা।
প্রয়োজনের তাগিদেই ইন্টারনেট শপিং-এর অগ্রগতিতে নিরাপদ শপিং-এর বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ মানুষ অনলাইন লেনদেনের ক্ষেত্রে একটা জিনিস প্রত্যাশা করে যে, তাদের টাকা যেন অনলাইন হ্যাকার বা কোন রকম সাইবার ক্রাইমের খপ্পরে পড়ে চুরি হয়ে না যায়। সম্প্রতি ক্রেডিট কার্ড চুরি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি মোট কথা অনলাইনে টাকা চুরির বিষয়টি সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। অনেক দোকানদার এবং প্রতিষ্ঠান নীতিহীনভাবে এসব অবৈধ লেনদেনের ব্যবহার করে থাকে। এই ধরনের ঘটনা বেশ কয়েক বছর থেকেই ঘটছে। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো বিশ্বাসযোগ্যতা হিসেব সম্ভাব্য অনেক ক্রেতাই হারাচ্ছেন এই পদ্ধতির কারণে। অর্থাৎ অসৎ ব্যবসায়ীদের অসাধু চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেক ক্রেতাই তাদের টাকা খুইয়েছেন। সম্প্রতিক সময়ে এনক্রেপ্ট অনলাইন ট্রানজেকশনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে এবং ফলশ্রুতিতে বিপুল সংখ্যক মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে কেনাকাটার সুবিধা গ্রহণ করে নানা রকম পণ্য ক্রয় করছেন। এক্ষেত্রে আস্থা আবার ফিরে এসেছে এবং এই কারণে মুনাফা দিন দিন উপরের দিকে উঠছে। কোম্পানিগুলো এবং বিক্রেতাদের দ্বারা ক্রেতা সাধারণ এখন অনেকটা নির্ভয়ে তাদের ক্রেডিট কার্ডের বিস্তারিত তথ্য অনলাইনে স্টোর করছেন। এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে প্রতারণা কার্যক্রম বিষয়ে কোম্পানিগুলোর প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ। যদি আপনি অনলাইনে শপিং করেন তবে আপনার ডেবিট কার্ডের চেয়ে বরঞ্চ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করবেন। ডেবিট কার্ডের ব্যাপারে আপনি একই মাত্রার সুরক্ষানীতি গ্রহণ করবেন না এবং এটিতে কোন প্রকার ভুল হলে আপনি তা ফিরে পেতে ততটা মরিয়া হবেন না। এখন স্টোর থেকে কিছু কিনতে আপনার বিস্তারিত খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারেন। বর্তমানে অনলাইন দোকানগুলোতে মিনিটের মধ্যে দ্রুত এবং দক্ষতার সাথে সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার বিষয়টি অত্যাবশ্যক। এক্ষেত্রে অনলাইন বিক্রেতাদের প্রয়োজন সর্বোচ্চ মান বজায় রাখা। অন্যথায় তারা তাদের গ্রাহক হারাবে এবং যারা অধিকতর ভাল সেবা প্রদান করবে সেখানে গ্রাহক বেশি যাবে। একটি উৎকৃষ্ঠ উদাহরণ হচ্ছে আমাজন এখানে অনলাইন অর্ডার প্রক্রিয়া অনেক দ্রুততার সহিত সম্পূর্ণ করা যায়। এবং যারা হচ্ছে একমাত্র কোম্পানি, যেখানে তারা ওয়ান ক্লিকে কেনাকাটা অফার করে থাকে। আমাজন খুব সতর্কতার সাথে অনলাইন কেনাকাটার বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান করে থাকে এবং পরবর্তী সময়ে আরো উন্নত সেবা দিতে তারা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রস্তুত। নিশ্চিতভাবে এতে কোন সন্দেহ নেই যে এই ধরণের সার্ভিস বেচা-কেনার ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ক্রেতারা তাদের বিভিন্ন স্টোর হতে এসব সেবা গ্রহণ করছেন।

আইপি অ্যাড্রেস গোপন রাখার উৎকৃষ্ট পন্থা
বর্তমানে আইডেনটিটি চুরির ঘটনা কারো কাছে তেমন একটা অপরিচিত নয়। অনলাইন দুনিয়াই হরমামেশাই ঘটছে আইডেনটিটি চুরির ঘটনা। তাই অনলাইনে অন্যান্য নিরাপত্তার সাথে বহুল আলোচিত একটি বিষয় হচ্ছে আইডেনটিটি চুরির ইস্যুটি। যেহেতু আপনার আইডেনটিটির নিরাপত্তার সাথে অনেক জিনিস জড়িত তাই এক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি।
সম্প্রতি অনলাইনে আইডেনটিটি চুরির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষ তাদের আইডেনটিটি সুরক্ষার বিষয়টি খুব দ্রুত নিশ্চিত করতে চায়। আপনার আইপি অ্যাড্রেস পরিবর্তন কিংবা গোপন রেখে অনলাইনে আপনার আইডেনটিটি সুরক্ষিত রাখতে কিছু সহজ-সরল পন্থা রয়েছে।
যখন আপনি কোন ওয়েব সাইটে ভিজিট করে থাকেন তখন আপনার আইপি অ্যাড্রেস আপনার কম্পিউটারে চিহ্ন রেখে যায় এবং যেসব হ্যাকাররা জানে কিভাবে আপনার আইপি স্ট্রেস করতে হয় এবং এমনকি জোর করে আপনার পার্সোনাল ইনফরমেশন চুরি করতে পারে। সুতরাং আপনার আইপি অ্যাড্রেস গোপন রাখার বিষয়ে কিছু নিয়ম কানুন শিখতে হবে কিছু নির্দিষ্ট সাইটে প্রবেশ করতে। আপনি আপনার নিরাপত্তা নিয়ে শতভাগ নিশ্চিত হতে পারেন না। আপনার আইপি পরিবর্তন করতে কিছু পন্থা রয়েছে-

ফ্রি প্রক্সি সাইটের ব্যবহার
ইন্টারনেটে প্রচুর পরিমাণে ফ্রি প্রক্সি সাইট রয়েছে। সুতরাং এসব সাইট খুঁজে পেতে আপনার এক মিনিটের বেশি সময় লাগবে না। সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে হাজার হাজার সাইটের মধ্য থেকে আপনি প্রয়োজন মত পিক করতে পারেন। সাধারণভাবে আপনি এই সাইটের ওয়েব অ্যাড্রেস-এ প্রবেশ করে ভিজিট করতে চাইলে সাইটটির দ্বারা ওয়েব বক্স প্রদান করবে এবং আপনি আপনার পছন্দমত সাইটে প্রবেশ করতে পারবেন ফ্রি প্রক্সি সাইটে আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করে। একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ যে, বেশিরভাগ ফ্রি প্রক্সি সাইট নিরাপত্তা নিয়ে খুব বেশি বিনিয়োগ করে না। তারা নিরাপত্তার চাইতে অধিক নামহীনতার জন্য সন্নিবিষ্ট। এর মানে তারা মনে করে অন্যান্য সাইট আপনার আইটি অ্যাড্রেস সুরিক্ষিত রাখবে কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে হ্যাকারদের দ্বারা সহজেই আক্রমণের শিকার হতে পারেন। সুতরাং নিরাপত্তার খাতিরে ফ্রি প্রক্সি সাইটের স্পর্শকাতর তথ্য ব্যবহার করবেন না।

পেইড আইপি হাইডিঙ সফটওয়্যারের ব্যবহার
আপনার কম্পিউটারে আইপি হাইডিঙ সফটওয়্যার ইন্সটল করা ফ্রি প্রক্সি সাইটের চেয়ে যে কোন দিনের জন্য নিরাপদ এবং অধিকতর শ্রেয়। বর্তমান সময়ে যথাযথভাবে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টে প্রচেষ্টা এবং অর্থের ব্যবহার অনাবশ্যক। তাই তারা সাধারণত এগুলো ফ্রি দিতে চায় না। এসব সফটওয়্যারের ব্যবহারে সুবিধা নিতে আপনাকে কিছু অ্যামাউন্ট পরিশোধ করতে হবে। তবে একটি ভাল বিষয় হচ্ছে তাদের একটি পরীক্ষামূলক ডাউনলোড পিরিয়ড রয়েছে। আপনি পরীক্ষা করে তাদের চাহিদা মত প্রয়োজনীয় পরিশোধ করে পূর্ণাঙ্গ সুবিধা নিতে পারেন।

গ্রহণযোগ্য সফটওয়্যার ব্যবহার
আপনার আইপি অ্যাড্রেস গোপন করতে প্রচুর সফটওয়্যার ডেভেলপ হয়েছে। বর্তমানে আপনার প্রয়োজন মত সঠিক সফটওয়্যার বেছে নেওয়া সত্যিই অনেক কঠিন কাজ। কোন রকম কষ্টকর পরিস্থিতি ছাড়াই আপনার আইডেনটিটি রক্ষায় সময়ের মূল্য এবং অর্থ বিবেচনায় গ্রহণযোগ্য সফটওয়্যার ব্যবহার করা উচিত।

ইন্টারনেট সিকিউরিটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা
বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট নিরাপত্তার বিষয়টি বিভিন্ন মহলে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশ্বের বাঘা বাঘা অনলাইন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা প্রতিনিয়তই চেষ্টা করে যাচ্ছেন অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নিরাপদ অনলাইন সেবা প্রদান করতে। এ নিয়ে নানা রকমের উদ্যোগও গৃহীত হচ্ছে। যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর একটি বড় অংশ বিভিন্ন সময় সাইবার আক্রমণের শিকার হচ্ছেন সেখানে সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিণত হবে এটাই স্বাভাবিক। বর্তমান সময়ে আমরা অনেক কিছুই প্রযুক্তি ছাড়া করতে পারিনা। আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও আমরা সর্বদাই প্রযুক্তির ছোঁয়া পেতে পুরাতনকে বিসর্জন দিয়ে থাকি তবুও কিন্তু আমরা ডিজিটাল বিশ্বে প্রবেশের নিরাপদ ব্যবহারগুলো সম্পর্কে অনেক সময় উদাসীন থাকি। প্রযুক্তির ফলে বর্তমানে প্রতিদিনের কাজ কর্ম যেমন ব্যাংকিং, শপিং, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ এবং ই-কমার্সের ক্ষেত্রে নানা রকম ব্যবহার আমাদের জীবনকে অনেক সহজ ও সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে গেছে। এতে কোন সন্দেহ নেই যে ইন্টারনেটের যুগে যে কেউ এর সুবিধা নিতে পারে। তবে বর্তমানে ওয়েব ছাড়া আমরা অনেক ক্ষেত্রেই কিছু কল্পনা করতে পারিনা। প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে আমরা প্রযুক্তির উৎকর্ষতা কামনা করলেও দূর্ভাগ্যজনিত কারণে কিছু মানুষ আছেন যারা অনলাইনে সর্বদাই অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বিভিন্ন রকম কার্যক্রম করে থাকেন। যারা এসব ঘটনার মাঝেও নিজের ইন্টারনেট নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন না তাদের জন্য সাইবার ক্রাইম অনেক বড় হুমকিস্বরূপ। কিন্তু আপনি যদি দূরর্দশীতার পরিচয় দিয়ে অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন থাকেন তবেই আপনি অধিক নিশ্চিত থাকবেন অনলাইন হুমকি থেকে। বস্তুত কেউ ইন্টারনেট থেকে হুমকি পেতে পারে এবং যখন কেউ এসব হুমকির সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করতে পছন্দ করেন তাদের উচিত নিজেদের সুরক্ষার খাতিরে যথাযথ উদ্দ্যোগ গ্রহণ করা। সম্ভাবত অনলাইন নিরাপত্তার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে ইন্টারনেট পরিভ্রমণে আপনার স্পর্শকাতর তথ্যগুলোতে কাউকে কখনো প্রবেশধিকার না দেওয়া যেমন ব্যাংকিং পাসওয়ার্ড, আইডি নম্বার এবং সামাজিক নিরাপত্তা নম্বার ইত্যাদি। ধরুণ আপনি অনলাইনে কিছু কিনতে যাচ্ছেন সর্বদাই লক্ষ্য রাখবেন আপনার ব্রাউজারের নিচের ডান কোনায় ছোট প্যাডলক ইমেজ আছে কি না? এর মানে হচ্ছে উক্ত সাইটটি নিরাপদ। আরও নিশ্চিত হতে ইউআরএল (ইউনিফর্ম রিসোর্স লোকেটর) আপনাকে সংযুক্ত করবে ইহার প্রথম চারটি বর্ণ এইচটিটিপি (হাইপার টেক্সট ট্রন্সফার প্রোটকল) হিসেবে। অন্যথায় আপনি ফিশিং সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। আমাদের উচিত অনলাইন সক্রামণের বিরুদ্ধে সর্বদা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতি গ্রহণ। আমরা ম্যালওয়ার সমন্ধে কথা বলছি যা হচ্ছে ভাইরাস ট্রোজাল, ওয়ার্ম এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কোডের আমব্রালা টার্ম। যা একজন হ্যাকার আপনার অজান্তেই আপনার কম্পিউটারে ইন্সটল করাতে পারে। আমরা জানি এগুলো আমাদের কি ক্ষতি করতে পারে। শুধু তাই নয় এগুলো আমাদের ফাইল বিনষ্ট করতে, কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা হ্রাস করতে এমনকি আমাদের কম্পিউটারের সমস্ত সিস্টেম ধংস করে সঙ্কটময় অবস্থা সৃষ্টির অন্যতম কারণ হতে পারে। আপনি সহজভাবে কি করবেন এগুলো বর্জন করতে? কোন ফাইল ডাউনলোড, সাইট পরিদর্শন এবং কোন লিংকে ক্লিক করতে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে। নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে আপনি খুব বেশি নিশ্চিত না হলে অযথা ঝুঁকি নিতে যাবেন না। বাস্তবিকভাবে অনলাইনের নানা রকম হুমকি মোকাবেলায় আমাদের কম্পিউটারগুলোকে অবশ্যই প্রস্তুত রাখা প্রয়োজন। আমাদের কম্পিউটার সিস্টেমে সন্দেহজনক কোন কিছুর প্রবেশ বন্ধ করতে ফায়ারওয়াল হচ্ছে প্রাথমিক ভিত্তি এবং এন্টি-ম্যালওয়ার প্রোগাম অথবা সফটওয়্যার কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। এই ধরনের অনলাইন সেইফগার্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এক্ষেত্রে যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রোগামগুলো নিয়মিতভাবে হালনাগাদ করতে হবে। অন্যথায় সফটওয়্যারগুলি নতুন ম্যালওয়ার সনাক্ত করতে সক্ষম হবে না এবং আমাদের নিরাপত্তা যতটা গুরুত্বপূর্ণ তার সাথে আইপি হিডারও। আইপি হিডার হচ্ছে একটি সফটওয়্যার, যেখানে আপনি বেনামীভাবে সার্ফ করতে পারেন। সুতরাং আপনার অনলাইন ত্যাগের কোন চিহ্ন কখনো আইপি অ্যাড্রেসে থাকবেনা। যা হ্যাকারদের আক্রমণের শিকার হতে পারে। এই চিহ্ন ছাড়া হ্যাকাররা জানতে পারবেনা যে আপনি অনলাইনে আছেন এবং যখন তারা জানতে পারবে না তখন তারা হ্যাকিং করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকবে।

ক্ষতিকর ভাইরাসের খপ্পরে ইন্টারনেট নিরাপত্তা
কম্পিউটার ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মাত্রই ভাইরাসের সাথে বহুল পরিচিত। আপনি হয়ত অনেক সময় এ সব ভাইরাস সম্পর্কে শুনেছেন এবং আপনি জানেন এসব ভাইরাস কতটা খারাপ হতে পারে। ভাইরাসের অনলাইন আক্রমণ আপনার সিস্টেমকে ধ্বংস করে দিতে পারে এবং কখনো কখনো আপনার অজান্তেই তারা আঘাত করে। আপনি হয়তো ভাবছেন আপনি একটি নির্মল রেজিস্ট্রি ক্লিনার ডাউনলোড করেছেন। সমস্যা অনুভব করবেন তখন, যখন আপনার কোন ফাইল হারাবেন বা যখন দেখবেন আপনার মাউস কাজ করছে না কিংবা আপনি কোন ডকুমেন্ট ওপেন করতে পারছেন না। যদি ঘটনা এরকম হয়ে থাকে তবে সম্ভবত একটি ভাইরাস ডাউনলোড করেছেন। এই ধরনের ঘটনা ঘটার জন্য অপেক্ষা না করে আপনার উচিত হবে ঘটনা ঘটার আগেই ইন্টারনেট নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা। আপনার নিরাপত্তা চাহিদানুসারে বাজারে বিভিন্ন ধরনের এন্টিভাইরাস সংটওয়্যার রয়েছে। যা আপনাকে সঠিক মাত্রায় সুরক্ষা প্রদান করতে পারে। এসব সফটওয়্যার ব্যবহার আপনার জন্য জ্ঞানীর কাজ হবে এবং এন্টিভাইরাসের কার্যক্রমের পাশাপাশি আপনি এসব সফটওয়্যার থেকে অন্যান্য কিছু সুবিধা পাবেন। একটি ভাল এন্টিভাইরাসের অন্যান্য কিছু ব্যবহারিক বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত যেমন- স্পাইওয়্যার সনাক্তকরণ, ফায়ারওয়াল ক্যাপাবিলিটি এবং অটো-আপডেটিং প্রক্রিয়া। আপনার কম্পিউটারের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং উক্ত সুবিধাগুলো প্রদান করতে প্রোগ্রামগুলো ডিজাইন করা হয়েছিল। আগে আপনি এগুলোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব না করলেও নিশ্চিতভাবেই এসব সফটওয়্যার ইন্সটল আপনার কম্পিউটারের নিরাপত্তা রক্ষায় বেশ কার্যকরী। যে কারণে সবগুলো ফিচার একসাথে চালু করা সময়কে প্রভাবিত করতে পারে। সুতরাং আপনি গুরুত্বানুসারে যে একটি কাজ করতে চান তা করতে পারেন যেমন- অটোমেটিক আপডেট, ফায়ারওয়াল এবং অটোমেটিক স্ক্যানিং। অনলাইন হুমকি, ক্ষতিকর ভাইরাস থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে হবে। অনেক সময় এ বিষয়টি আপনার ব্রাউজারের উপর নির্ভর করে। যাতে সাধারণত নিরাপত্তামূলক বৈশিষ্ট্য সন্নিবিষ্ট থাকে। যদিও সকল ব্রাউজার সমান বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন নয়। কিছু ব্রাউজার রয়েছে যেগুলো অন্যান্য ব্রাউজারের চেয়ে উচ্চমাত্রার নিরাপত্তা সুবিধা নিশ্চিত করতে আপনাকে অফার করবে। সুতরাং পছন্দের বিষয়টি আপনার বিবেচনাধীন। কিছু রয়েছে যেগুলো সহজ সরলভাবে নিয়মিত অধিক ভিন্নতায় আপনার ডাটার ব্যাকআপ সৃষ্টি করে। স্মরণ রাখতে হবে যে, একটিমাত্র ভাইরাসের ফলে আপনার কম্পিউটার ক্রাশ করতে পারে। সুতরাং ভাইরাসের হাত থেকে নিরাপদ থাকতে হবে। সর্বোপরি একটি ছোট ভাইরাস কি করতে পারে এমনটা ভেবে আপনি সত্যিই তাকে অবহেলা করতে পারেন না। যদি আপনি এই বিষয়ের উপর বিশেষজ্ঞ না হন তবু আপনি কাউকে পেতে পারেন যিনি এসব বিষয়ে মোটামুটি বিশেষজ্ঞ। ভাইরাস কর্তৃক আপনার ফাইল এবং এমনকি আপনার সিস্টেম ধ্বংস হবার আগেই যত শীঘ্রই দ্রুত আপনাকে ভাইরাসগুলো মৃত্যু নিশ্চিত করতে হবে। যখন ক্ষতি করতে ভাইরাসগুলো আসে তখন আপনার কম্পিউটারকে আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করা হচ্ছে একমাত্র নিরাপদ পথ। প্রশ্ন হতে পারে কেন এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার সর্বদাই প্রয়োজনীয়? যদি আপনি সম্ভাব্য অনলাইন আক্রমণ হ্রাস করতে চান এবং অনেক সময় না জেনেই কম্পিউটারে ভাইরাস ডাউনলোড করে থাকেন। আপনার কম্পিউটার নিরাপদ রাখতে আপনি এ ব্যাপারে সাহায্যহীন নন। প্রত্যহ নতুন ভাইরাস যেমন সৃষ্টি হচ্ছে তাই ডাটাবেজে ভাইরাস সনাক্ত করতে আপনার এন্টিভাইরাসকে নিয়মিত আপডেট করতে হবে। আপনার কম্পিটউটারের সাধারণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি আইপি হিডার ইন্সটল করতে পারেন যা আপনার আইপি অ্যাড্রেস গোপন রাখতে যখন আপনি অনলাইনে অবস্থান করবেন। যখন আপনি অনলাইনে বেনামি থাকবেন অর্থাৎ আপনার আইপি অ্যাড্রেস গোপন থাকবে তখন কোন হ্যাকার আপনাকে খুঁজবে না এবং আপনি হ্যাকার থেকে নিরাপদ থাকবেন।

প্রতারণামূলক ইমেইলে বিশ্বাস করা
প্রতারকচক্র সর্বদা নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করে নানা রকমভাবে অনলাইনে প্রতারণার ঘটনা ঘটাচ্ছে। এবং নিত্যনতুন এসব প্রতারণা দিন দিন বেড়েই চলছে। ফলশ্রুতিতে অনলাইন প্রতারণার বিষয়ে অসচেতন নিরীহ ব্যক্তিরা প্রতিনিয়তই শিকারে পরিণত হচ্ছে প্রতারক চক্রের। প্রতিদিনই অনলাইনে প্রতারণামূলক নানা ঘটনা ঘটছে। যদি আপনি বেশ কিছু সময় ধরে আপনার ইমেইল বন্ধ রাখেন তবে আপনি সম্ভবত বিশ্বের বিভিন্ন অজানা উৎস থেকে অনেক প্রতারণামূলক ও হাস্যকর ম্যাসেজ পেয়ে থাকবেন। ম্যাসেজে কেউ হয়ত বলবে আপনি পাঁচ মিলিয়ন ডলার জিতেছেন একটি লটারীর মাধ্যমে যেখানে আপনি কখনো সরাসরি অংশগ্রহণ করেননি কিন্তু আপনি রেনডমলি নির্বাচিত হয়েছেন। তাই ডলারগুলো আপনাকে এখন গ্রহণ করতে হবে। এই ধরনের বেশিরভাগ ইমেইলই সংগঠিত চক্রের মাধ্যমে ঘটানো হয়ে থাকে। যারা অজ্ঞতা বশত এই ধরনের প্রতারণায় পড়ে থাকে তারা অনেক সময়ই ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এবং প্রতারক চক্র লাভবান হয়। ইমেইল স্ক্যামার এর মাধ্যমে আমেরিকা ও যুক্তরাজ্য তাদের কারেন্সির বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে এবং এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এতে কোন সন্দেহ নেই যে ইন্টারনেট হচ্ছে ব্যবহারকারীদের জন্য একটি মুক্ত কেন্দ্রস্থল যেখানে প্রতারক চক্রও বিচরণ করতে পারে। ফলে ইন্টারনেটে তারা প্রবেশ করে সাধারণ ব্যবহারকারীদের সাথে নানা রকম প্রতারণায় লিপ্ত হচ্ছে। সনাতন ধারার যোগাযোগ পদ্ধতি যেমন- স্নেইন মেইল এবং ফ্যাক্সের চেয়ে স্ক্যাম অনেক সহজ হওয়ায় প্রতারকরা তা ব্যবহার করে থাকে। সর্বোপরি ইমেইলে প্রতারণামূলক কার্যক্রমগুলো ওয়েব জগতে বেশ জটিলতা তৈরি করছে তাদের জন্য যারা জানেন না কিভাবে এগুলো প্রতিরোধ করতে হয়। এখন পর্যন্ত ইন্টারনেট নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা কমপক্ষে পাঁচ ধরনের সাম্প্রতিক সময়ে পরিচালিত স্ক্যাম ইমেইল চিহ্নিত করেছেন। নাইজেরিয়ান স্ক্যাম লেটারে অগ্রিম-ফি বিষয়ে প্রতারণা করা হয়। অনেকে বড় অংকের জন্য প্রেরককে অর্থ-কড়ি পাঠিয়ে থাকে। ফিশিং স্ক্যাম এর লিংকে ক্লিক করলে আপনার অজান্তেই কম্পিউটারে ম্যালওয়ার ডাউনলোড হয়ে যায়। অনেক সময় প্রতারণামূলক ইমেইল থেকে দেখা যায় যে কিছু লোক আপনাকে খুন করার জন্য বের হয়েছে এবং আপনার জীবন রক্ষা করার জন্য তারা আপনার কাছে অর্থ দাবী করবে। আরো এক ধরনের স্ক্যাম চিহ্নিত হয়েছে যা হচ্ছে এন্টি-স্পাইওয়্যার স্ক্যাম। যা আপনাকে একটি এন্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার ডাউলোড করতে চেষ্টা করবে। সত্যিকার অর্থে তা কোন এন্টিভাইরাস নয় এটি হচ্ছে এক প্রকার ভাইরাস যার মাধ্যমে প্রেরক আপনার কম্পিউটারের যাবতীয় তথ্য চুরি করতে পারে। বর্তমানে সরকার এবং প্রাইভেট সংস্থাগুলো সাইবার আক্রমণের বিরুদ্ধে নানারকম কার্যক্রম পরিচালিত করছে এবং এ বিষয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে ব্যবহারকারীদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে। এত কিছু সত্ত্বেও এই ধরনের কার্যক্রম চলতেই আছে। এর অন্যতম প্রধান অন্তরায় হচ্ছে যথাযথ তদন্ত করে অনলাইনে প্রতারণাকারীদের বিচারের অভাব। এখনই সকল অনলাইন প্রতারণা বন্ধে যথাযথ উদ্দ্যোগ নিতে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত।

আপনার পার্সোনাল অনলাইন নিরাপত্তার জন্য আপনি কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। এক্ষেত্রে স্ক্যাম এবং সর্বোপরি অনলাইন নিরাপত্তার খুঁটিনাটি বিষয়ে আপনাকে প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করতে হবে। যখন আপনি এসব বিষয় সম্পর্কে জানবেন তখন আপনি আপনার কম্পিউটারকে নিরাপদ এবং আপনার অনলাইন পথচলা নিরাপদ করতে কি কি বর্জন ও গ্রহণ করতে হবে তা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারবেন। আপনার আইপি অ্যাড্রেসকে গোপন রাখতে আপনি একটি আইপি চেঞ্জিং সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন যা সেইফগার্ড হিসেবে কাজ করবে। যখন আপনার আইপি গোপন থাকবে অর্থাৎ ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকলেও অনলাইনে কেউ আপনার উপস্থিতি টের পাবে না। এর মানে হচ্ছে, ইমেইল স্ক্যাম, ম্যালওয়ার বা অন্যান্য ক্ষতিকর কিছু আপনাকে পাঠাতে পারবেনা, কারণ তারা আপনাকে খুঁজে পাবে না আপনার আইপি গোপন থাকার ফলে। ফলে আপনি অনলাইনে অধিক সুরক্ষিত ও নিরাপদে বিচরণ করতে পারবেন।

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment